নিজের সেরা পারফর্ম্যান্সের দিনে একাধিক রেকর্ড ভাঙলেন রিশাদ
বুকভরা আশা নিয়েই সিরিজ নির্ধারণী শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নেমেছিলো বাংলাদেশ। পাশাপাশি লক্ষ্য ছিলো আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ন্যায় দিনের আলোতে নিজেদের একটু প্রস্তুত করে নেওয়া। তবে লঙ্কানদের নতুন চমক নুয়ান থুসারার বোলিং আক্রমণে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। এমনকি নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে পালাক্রমে শান্ত, হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে দিয়ে পঞ্চম শ্রীলঙ্কান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাট্রিকের দেখা পান ২৯ বছর বয়সী এই বোলার। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি এটিকে ফাইফারে রূপ দিতে সক্ষম হন। অথচ এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে একই খেলোয়াড়ের নামের পাশে ৬ টি-টোয়েন্টিতে ছিলো স্রেফ ৩টি উইকেট। শ্রীলঙ্কার জন্য এটি এক বিরাট আবিষ্কারই বটে।
অন্যদিকে, এই ম্যাচে বাংলাদেশও খুঁজে পেয়েছে আরেক সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটার – রিশাদ হোসেনকে। রিশাদ অবশ্য দলের সঙ্গে আছেন বেশকিছু কাল যাবত। তবে তরুণ এই লেগ স্পিনার যেন আজ নিজেকে চেনালেন নতুন করে। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে রিশাদ আজ শিকার করেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস এবং অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের উইকেট। বদলে খরচ করেছিলেন ৩৫ রান।
পরবর্তীতে, ব্যাট হাতেও দলকে লজ্জার মুখে পড়া থেকে রক্ষা করেছেন সেই রিশাদই। টপ এবং মিডল অর্ডারের সেই বিভীষিকার পর মাত্র ৩৬ রানেই তখন ৬ উইকেট খুইয়ে নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ডের প্রায় কাছাকাছি চলে গিয়েছিলো স্বাগতিকরা। আটে নামা রিশাদও ব্যাটিং ক্রিজের আসার খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে দুইবার আউট হতে হতে বেঁচে যান। তবে নিজের সেই সৌভাগ্যকে পরবর্তীতে আর বিফলে যেতে দেননি তরুণ এই ক্রিকেটার। ৭ ছক্কার মারে ৩০ বলে ৫৩ রান করে দলের সম্মান রক্ষা করেন রিশাদ। পাশাপাশি বাংলাদেশিদের মাঝে আটে বা তারও পরে নেমে সর্বোচ্চ রান করার কীর্তিটাও এখন এই ব্যাটারের। এর আগে রেকর্ডটি দখলে ছিলো আফিফ হোসেনের। ২০১৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫২ রানের সেই ম্যাচ জেতানো ইনিংসটি খেলেন নয়ে খেলতে নামা এই অলরাউন্ডার। যদিও রিশাদ এবং তাসকিনের আজকের সাহসী ব্যাটিংয়ের পরও দল হেরেছে ২৮ রানের ব্যবধানে।
আবার রিশাদের দখলে গেছে বাংলাদেশিদের মধ্যে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটিও। সদ্য শেষ হওয়া সিরিজেই পূর্বের রেকর্ড (৬টি ছক্কা) নিজের নামে করেছিলেন জাকির আলী। তবে রিশাদের প্রত্যেকটি ছক্কা আজ উড়ে গিয়েছে লেগ সাইডের ওপর দিয়ে। আরো নির্দিষ্ট করে বললে রিশাদ তার ৫৩ রানের ৪১ রানই তুলেছেন ডিপ মিড উইকেট অঞ্চল দিয়ে। মাত্র দুটি সিংগেল তিনি অন সাইড থেকে নিয়েছেন। পরবর্তী ম্যাচের আগে তার এই বৈশিষ্ট্য অবশ্যই হয়তো প্রতিপক্ষের দক্ষ অ্যানালাইসিস্টের নজর এড়াবে না। পরিশেষে, একথা বলতেই হয় যে, লেগ স্পিনারের খরায় যেখানে বাংলাদেশ ভুগেছে প্রায় প্রতিনিয়তই, সেখানে রিশাদকে পর্যাপ্ত সুযোগ করে দেওয়াটাও এখন সময়ের দাবি।