জাকেরের রেকর্ড গড়া অভিষেক ম্যাচে বাংলাদেশের অল্পের জন্য পরাজয়
শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচ মানেই যেন বাড়তি উত্তেজনা। চায়ের দেশ সিলেটে আয়োজিত বাংলাদেশ প্রথম আন্তজার্তিক ম্যাচটি যেন একথাই ফের প্রমাণিত করলো। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হওয়া এম্যাচে টসে জিতে বোলিংয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ তবে সিলেট আন্তজার্তিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ব্যাটিং-বান্ধব উইকেট এবং বোলারদের খরুচে ইকোনোমি রেটের দরুণ বেশ সহজেই মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় সফরকারীরা। ওপেনার কুশল মেন্ডিসের মাত্র ৩৬ বলে খেলা ৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের পাশাপাশি আরেক টপ অর্ডার ব্যাটার সাদিরা সামারাভিকরামার ৪৮ বলে তোলা ৬১ রানের অপরাজিত ইনিংস তাদের দলকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে দেয়। শেষে আরেক লংকান ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কা ২১ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে দারুণ সমাপ্তি পেতে সাহায্য করেন।
বড় এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ রীতিমতো হিমশিম খেতে থাকে। ওপেনার লিটন তিন বলে মাত্র শুন্য রান করে ফেরেন যেখানে তার সঙ্গী সৌম্যর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে স্রেফ ১২ রান। আরেক সম্ভাবনায় ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়ও ফেরেন কেবল ৮ রান করে। অধিনায়ক শান্তও ৯০.৯১ স্ট্রাইকরেটে তোলেন ২০ রান। এরপর প্রায় দেড় বছর পর দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সেই পুরোনো চরিত্রে আবির্ভূত হন। তিনি আসার পূর্বে যেখানে বাংলাদেশ দল ছিলো বিপর্যস্ত, সেখানে মাত্র ৩১ বলে ৪টি ছক্কা ও ২টি চারের মাধ্যমে ৫৪ রানের অনন্য ইনিংস খেলেন ‘সাইলেন্ট কিলার’। তবে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন ৪০ বলে ৯২ রান। টপ অর্ডারের এমন ব্যর্থতার পর সেই লক্ষ্যকে এরকম অপরাজেয়ই মনে হচ্ছিলো।
অবশ্য সদ্য অভিষিক্ত জাকের আলীর জন্য হয়তো সৃষ্টিকর্তা অন্যকিছুই লিখে রেখেছিলেন। মাত্র ৩৪ বল খরচ করে তিনি যে ৬৮টি মূল্যবান রান সংগ্রহ করেন, সেটি বাংলাদেশকে জয়ের একদম কাছাকাছি নিয়ে যায়। ৬ ছক্কা এবং ৪টি চার মারার পাশাপাশি তিনি ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করে নিজের অভিষেককে রাঙিয়ে তোলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে দাসুন শানাকাকে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে থাকা আসালাঙ্কার তালুবন্দি হয়ে তিনি ফিরে গেলে বাংলাদেশ আর শেষ হাসি হাসতে পারেনি। যদিও শরিফুল এরপরের বলেই কাভারে একটি অসাধারণ চার মারার মাধ্যমে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, শানাকা বাকি দুই বলে মাত্র ২ রান খরচ করে শ্রীলঙ্কাকে ৩ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় এনে দেন।
আন্তর্জাতিক অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের হিসেবে তিনি এখন ২৫ কিংবা ২৬তম অবস্থানে রয়েছেন। অবশ্য এই তালিকায় তার অনেকটা ওপরে রয়েছেন আরেক বাংলাদেশি ব্যাটার জুনায়েদ সিদ্দিকী। ২০০৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কেপ টাউনে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৭১ রানের সেই ইনিংসও অবশ্য জেতাতে পারেনি বাংলাদেশকে।
সংশোধন: গেল বছর চীনে আয়োজিত এশিয়ান গেমসের ম্যাচগুলোকে আইসিসি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মর্যাদা দেওয়ায় জাকেরের অভিষেক সেসময়ই হয়ে যায়। এতে করে সিনিয়র দলে প্রথম ম্যাচে আলো ছড়ানোর পরও রেকর্ডবুকে আর নামটি ওঠেনি।