যেসব দুর্বলতা বিশ্বকাপে ভোগাবে বাংলাদেশকে
কাগজে কলমে বাংলাদেশ সমীহ করার মতো দল হলেও, অনেক পরিসংখ্যান কিংবা স্ট্র্যাটেজি বিবেচনায় ঢের পিছিয়ে। টাইগারদের শক্তিমত্তা মোটামুটি সবার ই জানা। তবে এর মধ্যেই কয়েকটি কারণ ভোগাতে পারে টাইগারদের। এমনকি এসব কারণে বিশ্বকাপ সপ্ন অধরাই থেকে যাবে টাইগারদের।
প্রথমত উপমহাদেশীয় কন্ডিশনে খেলা হলেও বাংলাদেশই একমাত্র দল যাদের স্কোয়াডে কোনো লেগ স্পিনার নেই। দলে লেগ স্পিনারের অভাব এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলিং প্রভাব ফেলতে পারে মারাত্মকভাবে । এবারের আসর ভারতে হওয়ায় প্রতিটি দলই স্পিন ডিপার্টমেন্টে অন্তত একজন ডানহাতি লেগ স্পিনার বা বাঁহাতি আন অর্থডক্স স্পিনার রেখেছে। কিন্তু নেই বাংলাদেশের।
ধীরগতির ব্যাটিং বাংলাদেশের আরেকটি মাথাব্যথার কারণ। এই বিশ্বকাপে সব দলের মধ্যে বাংলাদেশের দলীয় রান রেট সবচেয়ে কম। অর্থাৎ সব দলের মধ্যে সবচেয়ে ধীরগতিতে ব্যাটিং করা দল বাংলাদেশ। গত এক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া প্রতিটি দলের রান রেট বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। গত এক বছরে খেলা ওয়ানডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৩ ম্যাচে গড়ে ৫.২৩ রান রেটে ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ।
ব্যাটার প্রতি গড় রানের পরিসংখ্যানেও শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ। কোনো দলের মোট রানকে ব্যাটসম্যানের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে প্রতি ব্যাটসম্যানের গড় রান পাওয়া যায়। এই হিসেবের মাধ্যমে ধারণা দেয়া হয় যে একটি দলের প্রত্যেক ব্যাটার গড়ে কত রান করলো। এই হিসেবেও তলানিতে অবস্থান বাংলাদেশের। ২৩ ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান প্রতি গড় রান ২৭.৪২।
একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারের ঘাটতি মারাত্মকভাবে ভোগাবে বাংলাদেশকে। লেগ স্পিনারের মত পেস বোলিং অলরাউন্ডারের হিসেবেও এবারের আসরের অধিকাংশ দল থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ। র্যাংকিংয়ের হিসেবে এবারের টুর্নামেন্টে পেস বোলিং অলরাউন্ডারদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া। মারকুটে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে বোলিং করার সক্ষমতা রয়েছে তার।
মাঝখানে পেসার সাইফ উদ্দিনকে এই পজিশনে আশা করা হলেও বড় মঞ্চে তিনি বারবার হতাশ করেছেন। শেষ দিকে ইনজুরির কারণে দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে থাকায় বিবেচিত হননি তিনি।
টেইল এন্ডারদের ব্যাটিং গড়ও বাংলাদেশের চিরাচরিত সমস্যা। টেইল এন্ডার বা বোলারদের ব্যাট হাতে রান করতে না পারার সমস্যাটা বাংলাদেশ দলে অনেকদিন ধরেই। গত এক বছরের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেও একই চিত্র দেখা যায়। দলের ব্যাটসম্যান প্রতি গড় রান কম হওয়ারও অন্যতম প্রধান কারণ টেইল এন্ডারদের ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতা।
গত এক বছরে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে আট উইকেট পড়ে যাওয়ার পর শেষ দুই উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের ব্যাট করতে হয়েছে ১৬ ম্যাচে। এই ১৬ ম্যাচে শেষ দুই উইকেটে দলের রানের খাতায় যোগ হয়েছে গড়ে ১৭.৫ রান।
বিগ স্কোর গড়তে না পারা বাংলাদেশের আরো একটি বড় সমস্যা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে দুই দশকের বেশি হলেও এখনো বিগ স্কোর করার সক্ষমতা গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের। গত এক বছরে ১৬ ম্যাচ খেলে চার ম্যাচে ৩০০’র বেশি রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ দল।গত এক বছরে বিশ্বকাপের দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে কম সংখ্যক ৩০০+ স্কোর করেছে শুধু নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া।
তবে এসব ছাপিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সমর্থকরা।