বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ
স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ
![স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ](https://i0.wp.com/bn.tigercric.com/wp-content/uploads/2021/10/mahmudullah-riyad-1.jpg?resize=753%2C391&ssl=1)
আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসর। সপ্তমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করবেন দলের পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম সদস্য সিনিয়র অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
১৫ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের গায়ে তকমা জুটেছে ‘সাইলেন্ট কিলার’ হিসেবে। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট হাতে ফিনিশিংয়ের কাজ করা কিংবা দলের জয়ে অবদান রাখলেও তুলনামূলক কম আলোচনায় থাকা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের এবার অবশ্য পর্দার আড়ালে থাকার সুযোগ নেই। কেননা দলকে টেনে নিতে সামনে থেকেই বুক চিতিয়ে লড়াই করে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: [স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-২: সাকিব আল হাসান]
বাংলাদেশ দলের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ খেলেছেন একশরও বেশি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। অভিজ্ঞতার বিচারে এই অলরাউন্ডার তাই খানিকটা এগিয়ে অন্যানদের থেকে। নিজের অভিজ্ঞতার সবটুকু ঢেলে দিয়ে তাই দলের জয়ে অবদানটাও রাখতে হবে তাকেই।
অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশ দলকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নেতৃত্ব দিয়েছেন ২৭ ম্যাচে। যেখানে তিনি দলকে জয়ের হাসি এনে দিতে পেরেছেন ১৩ ম্যাচে। বাকি ১৪ ম্যাচে হার থাকলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে টি-টিয়েন্টি ফরম্যাটে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডটা তারই দখলে। ঘরের মাঠে গত নিউজিল্যান্ড সিরিজ, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ কিংবা জিম্বাবুয়ে সিরিজেও তার অধিয়ানকত্বেই জিতেছিল টাইগাররা। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নয় ঘরোয়া ক্রিকেটেও সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রে সফল মাহমুদউল্লাহ। গত বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লিগেও তার হাত ধরেই শিরোপা জিতেছিল জেমকন খুলনা। এছাড়া বিপিএলেও নিয়মিত অধিনায়ক রিয়াদ। তাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে আস্থার প্রতিদান আশা করা যেতেই পারে তার কাছ থেকে।
ব্যাট হাতে বরাবরই আস্থার নাম মাহমুদুল্লাহ। সাধারণত পাঁচ কিংবা ছয় নম্বরে তাকে ব্যাট হাতে দেখা গেলেও গত কয়েকটি সিরিজে উপরেও ব্যাট করতে দেখা গেছে তাকে। সর্বশেষ ১০ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মিরপুরের স্লো উইকেটে মাহমুদুল্লাহ রয়েছে ২১১ রান। একটি অর্ধশত রানের ইনিংস ছাড়াও এক ম্যাচে ৪৩ রানে অপরাজিত ও আরেক ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন ৩৭ রানে। নিজের ব্যাটিং পজিশন যাই হোক না কেন দলের জন্য নিজেকে উজার করে দিয়ে খেলতে শতভাগ প্রস্তুত থাকেন সর্বদাই!
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিকি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ খেলেছেন সর্বমোট ১০২টি ম্যাচ। যেখানে তার নামের পাশে রয়েছে ১৭৭১ রান। টাইগার ক্রিকেটারদের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা সর্বোচ্চ। অধিনায়ক রিয়াদের স্ট্রাইকরেট ১১৮.৬৯। বাংলাদেশের জার্সিতে আসন্ন বিশ্বকাপ খেলবেন ও এই ফরম্যাটে অন্তত ১ হাজার রান করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের রিয়াদের স্ট্রাইকরেট হচ্ছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও কোনো শতকের দেখা না পেলেও অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন পাঁচবার। তার সমান সংখ্যক অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও সৌম্য সরকার। ২৪.২৬ গড়ে ব্যাটিং করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ইনিংস সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ৬৪।
বল হাতে পার্ট টাইমার হলেও নিয়মিত বোলাররা প্রতিপক্ষের ব্যাটিং জুটি বিচ্ছিন্ন করতে ব্যর্থ হলে সেখানে সময়মত সাফল্য এনে দেন রিয়াদ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৬৪ ইনিংসে রিয়াদ দখলে নিয়েছেন ৩৩টি উইকেট। ৭.১৮ ইকোনোমিতে বল করা রিয়াদের গড় ২৮.৬৩। এক ইনিংসে ১৮ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তার সেরা বোলিং ফিগার।