ফিচারবাংলাদেশ ক্রিকেট

ডোমিঙ্গোর বিষ্ফোরক মন্তব্য, ক্ষিপ্ত বোর্ড

গত ৩ বছর ধরে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্বপালন করছেন আফ্রিকান রাসেল ডোমিঙ্গো। এই ৩ বছরে বাংলাদেশের নেই কোন অর্জন বা উন্নতি, শুধু চোখে পড়ে অবনতি। তাইতো ক্রিকেট পাড়ায় সমালোচনা-আলোচনা জন্মদেয় প্রধান কোচের ভূমিকা নিয়ে।

তবে দীর্ঘ ৩ বছর পর ডোমিঙ্গোময় সময় কেটে এসেছে। ডোমিঙ্গোর সমস্যা বা ব্যার্থতা নিয়ে জেগে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এশিয়া কাপ থেকে বিরতি দেওয়া হয়েছে এই আফ্রিকান কোচকে। ডোমিঙ্গোর পরবর্তী থাকা বা না থাকা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

তবে সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখলে লুকিয়ে যাওয়া ডোমিঙ্গো মুখ খুলেছেন অবশেষে। দীর্ঘদিনে কি কারনে তিনি দেশের উন্নতি করতে পারেননি তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার সাথে দোষ চাপিয়েছে বোর্ডের উপর।

ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন করলে ডোমিঙ্গো বলেন, “একদমই তাদের মতো করে ছেড়ে দিতে চাইনি। তবে চিৎকার-চেঁচামেচি করে খুব একটা লাভ হয় না। যখন ওরা ভুল করে, তখন বাজেভাবে সমালোচনা করলে ক্রিকেটারদের সেরাটা পাওয়া যাবে না। আমি এটাই করতে চাইনি। ক্রিকেটাররা ভুল করবে, তাদের সেটা থেকে শিখতে হবে। সে জন্য নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। কিন্তু তারা সেটা করতে পারে না। কারণ, তাদের সারাক্ষণ পরামর্শের ওপর রাখা হয়, ধমক দেওয়া হয়। এটা যে একদিক থেকে আসে, তা নয়। চারদিক থেকেই আসে। যে কারণে নিজেদের ক্রিকেটীয় জ্ঞান বাড়ে না। নিজেরা চিন্তা করতে পারে না। ছেলেরা এতে এতই অভ্যস্ত হয়ে গেছে যে সব সময় এখন পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকে।”

শুধু তাই নয়, ডোমিঙ্গো আরো বলেন, “আমাকে সব সময় বলা হতো, ওদের সারাক্ষণ ধমকাতে হবে। কঠোর হতে হবে। এভাবেই নাকি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সব সময় আচরণ করা উচিত। আমি নিশ্চিত, আমার আগেও অনেক কোচ একই কাজ করেছে। কিন্তু আগের কোচরাও টি-টোয়েন্টিতে কিছু করতে পারেনি।”

দক্ষিন আফ্রিকার কোচ থাকাকালীন সেখানকার ও এখানকার রাজনীতি নিয়েও বলেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, “এই দলটা একদম অরক্ষিত। সবাই মন্তব্য করতে থাকে, সেটা দল পর্যন্ত পৌঁছেও যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমি সাত বছর কাজ করেছি। সেখানে একজন কোচ, স্টাফ, নির্বাচক…এইটুকুই। বাইরের কিছুই দলে ঢোকে না। এখানে সে রকম না। দক্ষিণ আফ্রিকার হস্তক্ষেপ রাজনৈতিক। এখানে সম্পূর্ণ ভিন্ন।”

এমন ডোমিঙ্গোর নানান আলোচিত বক্তব্য নানান সমালোচনা ও আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বোর্ডের কাছেও পৌঁছিয়েছে ডোমিঙ্গোর এই বিষ্ফোরক ও আলোচিত মন্তব্য যেখানে উঠে এসেছে ক্রিকেট বোর্ডের নানান বিষয়। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন যে, “সে আমাদের কোড অফ কন্ডাক্ট ভেঙ্গেছে। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই বোর্ড কতৃক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে”

হয়তো দূর দেশ দক্ষিন আফ্রিকায় একদিন পাড়ি জমাবেন বাংলার ক্রিকেটের সমালোচিত কোচ। হয়তো তাকে আর দেখা যাবেনা বাংলাদেশের মাটিতে কিংবা স্টেডিয়ামের চারপাশে অথবা ড্রেসিং রুমে। কিন্তু তার বলে যাওয়া ক্রিকেটের এমন সমস্যাগুলো কি কখনো শেষ হবে? ঘুরে দাড়াতে হবে বোর্ডকে। নয়তো এভাবেই একদিন হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের ক্রিকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button