ক্রিকেট বিশ্বকাপ

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-৯: শামিম পাটোয়ারি

বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-৯: শামিম পাটোয়ারি

বর্তমানে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দল বাংলাদেশের যুবারা। আকবর আলীর নেতৃত্বে শিরোপাজয়ী টাইগার যুব দলের অন্যতম সদস্য শামিম হোসাইন পাটোয়ারি, যিনি সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দলেও। ‘বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ’ এর এই পর্বে থাকছে শামিম পাটোয়ারির আদ্যোপান্ত।

জাতীয় দলে কিছুটা আগেভাগেই যেন ডাক পেয়ে গেছেন শামিম হোসাইন পাটোয়ারি। হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো যখন সৌম্য সরকারকে ফিনিশার বানানোর আপ্রাণ চেষ্টায় মগ্ন তখন সেখানে শামিম পাটোয়ারি এসেছিলেন ফিনিশারের ভূমিকা নিয়েই।

শামিম পাটোয়ারির ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার খুব বেশি সুযোগ নেই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে একটি ডাবল সেঞ্চুরি রয়েছে এই ব্যাটসম্যানের। অর্থাৎ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই প্রতিপক্ষ দলের বোলারদের বুকে কাঁপন ধরানো এই ব্যাটিংই তার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।

আরও পড়ুন: [বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ]

ক্রিকেটের ভাষায় একটা কথা আছে ‘চাবুক চালানো ব্যাটিং’। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যা ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধাজনকই বলা যায়। জায়গায় দাঁড়িয়ে নিচের দিকের বলগুলোকে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর পদ্ধতি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে এটিকে। বিশেষ করে যারা লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করে থাকেন তাদের জন্য এভাবে ব্যাটিং করাটা বাড়তি কাজে দেয় দলের জন্য।

ঘরোয়া ক্রিকেটে শামিম পাটোয়ারি ব্যাটিং ও বোলিং দুইটাই করে থাকেন। সেই সাথে তিনি প্রশংসিত হয়ে থাকেন নজরকাড়া ফিল্ডিংয়ের জন্য। চলতি বছর ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রাইম দোলেশ্বরের জার্সিতে তিনি খেলেছেন ১৩টি ইনিংস। যেখানে তার রান ২৪২! এই রানের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যা নজরে পড়ার মত সেটা হল ১৪৪ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন স্ট্রাইকরেট দলের জন্য বেশ গুরুরত্বপূর্ণ।

জাতীয় দলে শামিমের অভিষেক হয়েছে চলতি বছরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুই ম্যাচে খেলা শামিম করেছিলেন ৬০ রান, এক ম্যাচে ৩১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এই সিরিজে তার স্ট্রাইকরেট ছিলো ২১৪.২৮। অর্থাৎ শেষের দিকে কম বলে বেশি রান করার সামর্থ্যের ক্ষেত্রেও বেশ এগিয়ে শামিম।

জিম্বাবুয়ের স্পোর্টিং উইকেটে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে গেলেও ঘরের মাঠে স্লো উইকেটে কিছুটা খাবি খেয়েছেন তিনি। জাতীয় দলের জার্সিতে ৭ ম্যাচে তার সর্বমোট রান ৭২। অর্থাৎ জিম্বাবুয়ে সিরিজে দুই ম্যাচের ৬০ রান বাদ দিলে পাঁচ ম্যাচে তার রান ছিল ১২ রান। বিশ্বকাপে যদি অন্তত স্পোর্টিং উইকেট পাওয়া যায় তাহলে হয়তো শামিম জ্বলে উঠতে পারেন আবারও।

শামিম পাটোয়ারির ব্যাটিং বিভাগে খুব বেশি দুর্বলতা নেই বললেই চলে। বোলারদের উপর চাপ প্রয়োগ করে ম্যাচের মোমেন্টাম চেঞ্জ করে দেয়ার ভূমিকাটাই বরং তার মধ্যে বেশি। সেই সাথে দ্রুত সিঙ্গেল নেয়ার ক্ষেত্রে শামিমের দক্ষতা একটু বেশি। তাই নিজের স্ট্রাইকরেট বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করে থাকে এই সিঙ্গেলগুলো। তাছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় দলের দিকে লক্ষ্য করলে তাদের রানের গতি অনেকটাই বাড়িতে দেয় তাদের সেই সিঙ্গেল। ফলে ম্যাচে সিঙ্গেল বের করার দায়িত্বটা বেশ কাজে আসবে দলের।

বিশ্বকাপের একাদশে শামিমকে জায়গা পেতে হলে অবশ্য কিছুটা কষ্ট কতে হবে। কেননা ছয় নম্বরে সোহান ব্যাট হাতে থাকলে সাত নম্বরে দেখা যেতে পারে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। তাই হয়তো শামিমকে খুব বেশি ম্যাচে দেখা নাও যেতে পারে বিশ্বকাপের একাদশে। তবে একাদশে জায়গা পেলে নিজের সেরাটা দিয়েই বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে প্রমান করে জাতীয় দলে জায়গা পাকা করতে চেষ্টা করে যাবেন তিনি এমনটাও প্রত্যাশা ক্রিকেটভক্তদের।

নিয়মিত ক্রিকেট আপডেট পেতে আমাদের সাথে যুক্ত হোন ফেসবুকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button