ক্রিকেট বিশ্বকাপ

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১৫: নাসুম আহমেদ

বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-১৫: নাসুম আহমেদ

ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন ২৬ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসেও বল হাতে দেখিয়েছেন স্পিন ঘূর্ণি, ফলে জায়গা মিলেছে বিশ্বকাপের দলেও। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই বিশ্ব আসরে দলের হয়ে কতটা অবদান রাখতে পারেন নাসুম, সামর্থ্য কিংবা দুর্বলতার জায়গাটাই বা কোথায় তাই দেখে নেয়া যাক ‘বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ’ এর এই পর্বে।

বাংলাদেশ দলে বাঁহাতি স্পিনারদের ছড়াছড়ি থাকে নিয়মিতই। বিশ্বকাপের এই স্কোয়াডেও সাকিব আল হাসানের সাথে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে রয়েছেন নাসুম আহমেদ। দলে পাকা স্পিনার হিসেবেই মূলত রয়েছেন নাসুম। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া নাসুম কতটা কার্যকর হতে পারেন বল হাতে?

বাঁহাতি এই স্পিনারের বলের ভেরিয়েশন খুব একটা নেই বললেই চলে। একই জায়গায় বল করার সামর্থ্য অবশ্য রয়েছে তার। সেই সাথে উইকেট টু উইকেট বল করার ক্ষেত্রেও বিশেষ পারদর্শী এই স্পিনার। তবে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে বিশ্বের সেরা সব ব্যাটসম্যানদের সামনে ভেরিয়েশন না আনলে নাসুম কতটা কার্যকর হবেন বিশ্বকাপের মঞ্চে সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।

অভিজ্ঞতার বিচারে নাসুম বেশ পরিনত ঘরোয়া ক্রিকেটে। প্রায় ১০ বছর ধরে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার পর অভিষেক হয়েছে তার। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ টুর্নামেন্টেও ছিলেন দুর্দান্ত। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের অভিজ্ঞতা বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটের যে বিস্তর ফারাক রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এক্ষেত্রেও নাসুমকে ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা কিভাবে বিশ্বকাপের মঞ্চে কাজে লাগানো যায় সেই মন্ত্র খুঁজে বের করতে হবে।

আরব আমিরাতের কন্ডিশন বাংলাদেশ থেকে কিছুটা ভিন্ন। অর্থাৎ মিরপুরের উইকেটের সাথে আরব আমিরাত কিংবা ওমানের উইকেটের যে পার্থক্য রয়েছে সেটার সাথে মানিয়ে নিতে হবে এই স্পিনারকে। সর্বশেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে নাসুমের খাপছাড়া বোলিং টিম ম্যানেজমেন্টের কপালে চিন্তার ভাঁজ না ফেললেও মূল পর্বে এমন বোলিং করলে মূল্য দিতে হবে গোটা দলকেই।

[আরও পড়ুন: সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ারের ৭টি সমালোচিত ঘটনা]

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে অভিষেক হওয়া নাসুম ওই সফরে তিন ম্যাচে নিয়েছিলেন মাত্র ২ উইকেট। সেই সাথে বেধরক মার খেয়েছিলেন শেষ ম্যাচে গিয়ে। স্পোর্টিং উইকেটে তাই বাঁহাতি এই স্পিনারের স্ট্রাগল করাটা হয়তো দলের জন্যও সুখকর কিছু বয়ে আনতে পারবে না।

স্পোর্টিং উইকেটে এমন খাপছাড়া বোলিং করলেও ভিন্ন চিত্র দেখা গিয়েছিল স্লো উইকেটে। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সর্বমোট নিয়েছেন ১৬ উইকেট। যেখানে কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথামের সাথে। তাই স্পিন ট্র্যাকে তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বললেও চলে। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া নাসুম স্পিন ট্র্যাকে তাই হয়ে উঠতে পারেন দলের ট্রাম্পকার্ড।

এখন পর্যন্ত দেশের জার্সিতে শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি খেলেছেন নাসুম আহমেদ। অন্য ফরম্যাটে অভিষেক না হলেও সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে দেশের জার্সিতে খেলা ১৪ ম্যাচে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। মাত্র ৬.২২ ইকোনোমিতে বল করা নাসুমের গড় ১৫.৫৫। পরিসংখ্যান বিবেচনা করলে তাই খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন এই স্পিনার। তবে সেই পরিসংখ্যান পালটে যেতে পারে যেকোনো ম্যাচেই।

স্লো উইকেট থাকলে বিশ্বকাপের একাদশে টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারে একজন বাড়তি স্পিনার খেলানোর। এক্ষেত্রে সাকিব আল হাসানের সাথে থাকতে পারেন নাসুম আহমেদ এবং শেখ মেহেদি হাসান এই দুজনই। তবে স্পোর্টিং উইকেট থাকলে যেকোনো একজনকে দেখা যেতে পারে একাদশে। সেই একজন নাসুম নাকি মেহেদি তা হয়তো বলে দিবে সময়ই।

নিয়মিত ক্রিকেট আপডেট পেতে আমাদের সাথে যুক্ত হোন ফেসবুকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button