ক্রিকেট ফ্যাক্ট

ভয়ঙ্কর সেই সমুদ্র যাত্রাকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছে বিসিবি!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষ করে বাংলাদেশ দল ডমিনিকায় পৌঁছানোর জন্য যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে পায় ফেরি। সাধারণত বিমানে যাতায়াত করার কথা থাকলেও সেখানে বিমানের ফ্লাইট সীমিত করে দেয়ায় বাধ্য হয়েই ফেরিতে সমুদ্র পার হতে হয় বাংলাদেশ দলকে। যেখানে দেখা যায় বড় ধরণের বিপত্তি।

ডমিনিকায় পৌঁছাতে গিয়ে মোশন সিকনেসের শিকার হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই। যার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই টাইগার ভক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। সেই সাথে বিসিবিরও তুমুল সমালোচনায় মাতেন কেউ কেউ।

তবে এমন ঘটনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেছেন বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি জানালেন কিছু গণমাধ্যম এই ঘটনাকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে বড় করে তুলেছে। সেই সাথে ক্রিকেটারদের দীর্ঘ সময় সমুদ্র যাত্রার অভিজ্ঞতা না থাকাতেই এমনটা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সুজন বলেন, ‘’আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিষয়টা যেভাবে এসেছে আসলে ওরকম ছিল না। আমাদের সাথে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড যোগাযোগ করে আমরা কিন্তু সাথে সাথেই আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছিলাম। আমাদের দলের এই ধরনের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নেই। এটা আমরা জানিয়েছিলাম।‘’

বিমান চলাচলে জটিলতার কথা জানিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘’পরবর্তীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড জানায়- বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে গেছে, বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান চলাচল সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে, খুব ছোট ছোট বিমান এখানে যাতায়াত করে। একইসাথে আমাদের জানাল তারা ফেরী সার্ভিসে ব্যবস্থা করছে যা ছোট ক্রুজ শিপের মত। এটা নিয়মিত চলাচল করে এবং বাংলাদেশ দল, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, আইসিসির অফিসিয়াল, টিভি ক্রু ও ধারাভাষ্যকাররা একইসাথে যাবেন।‘’

”এই বিষয় নিশ্চিত করার পর আমাদেরও আলোচনা থামিয়ে দিতে হয়। কারণ দুই দল একইসঙ্গে ট্রাভেল করছে। তখন বিষয়টা মেনে নিতে হয়। যখন আমাদের দল কোনো দেশে যাবে, যাবতীয় সব দায়িত্ব ঐ বোর্ডেরই। যেমন কোনো বিদেশি দল আসলে আমাদের ওপর নির্ভর করতে হয়।‘’

অভিজ্ঞতা না থাকাতেই ক্রিকেটারদের এমন অবস্থা হয়েছে জানিয়ে বিসিবি সিইওর ভাষ্য, ‘’শুধু বাংলাদেশের দলের খেলোয়াড়রাই অসুস্থ হয়েছেন তা না। বাজে আবহাওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দেরও একইরকম অবস্থা হয়েছে। কিন্তু আমাদের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের এই অভিজ্ঞতা নেই তাই তাদের প্রতিক্রিয়া বেশি ছিল, এটাই স্বাভাবিক। এটাই আমাদের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে যার কারণে আপনারা উদ্বেগ জানাচ্ছেন।‘’

‘’এটা পুরোপুরি স্বাগতিক বোর্ডের বিষয়। বিষয়টা এত সিরিয়াসলি না দেখে… বোর্ডের সাথে বোর্ডের একটা যোগাযোগ থাকে। এটাকেই গুরুত্ব দেই। অবশ্যই আমাদের দেশ হলে ভিন্ন ব্যাপার হত। আমরা সফরকারী দলকে আগে প্রাধান্য দিতাম। ওদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের ভেন্যুগুলো এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে। ওদেরও কিছু লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ থাকে। করোনা পরিস্থিতির পর এই পরিস্থিতি ওদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জিং হয়েছে।‘’

এ ব্যাপারে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘’এসব কারণেই হয়ত এমন হচ্ছে। আমরা অবশ্যই ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলব এবং আমাদের কনসার্ন জানাব, যেন ভবিষ্যতে এমন না হয়। আরেকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে- ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বজায় রেখেই আমাদের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান বা এ দলের প্ল্যান করে থাকি। এক্ষেত্রে বোর্ড টু বোর্ড সুসম্পর্ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একটা বিষয় হল আর সাথে সাথে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম, এ বিষয়টা ঠিক হবে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।‘’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button