শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে শেষ হাসি অজিদের

একটা টেস্ট ম্যাচ! ৫দিনের খেলা! কতটুকু নাটকীয়তা সম্ভব? যতটুকু সম্ভব তার চেয়ে ঢের বেশি নিয়েই পসরা সাজিয়ে বসেছিলো এজবাস্টনের সবুজ গালিচায়।
গত ৫টি দিন ইংলিশ আর অজিদের ব্যাটে-বলে যে দ্বৈরথ দেখা গেলো তাতে বলা-ই যায় ৫ দিনের টেস্ট ক্রিকেটও দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে এখনো থাকতে পারে। ৫ দিন টিভিসেটের সামনে বসে থাকাটাই যে এখানে মুখ্য নয়! আপনি অফিসে বসে এই ম্যাচটির কথা ভাবছেন, বাজারে গিয়ে ভাবছেন! আপনি ছাত্র পড়তে বসে ম্যাচটির কথা ভাবছেন! এখানেই বুঝি এজবাস্টন টেস্ট স্বার্থক, ক্রিকেট স্বার্থক।
টেস্টের প্রথম বলে চার দিয়ে শুরু হয় যে টেস্ট সেই টেস্ট আর যাই হোক ম্যাড়মেড়ে যে হতে পারে না তা অনেকেই আঁচ করেছিলো। ৪র্থ দিনের শুরুর বলে কুল কাস্টমার জো রুট যখন রিভার্স স্কুপ এটেম্পট নিলেন তখন আর কারো বুঝতে বাকি রইলো না যে ভয়ংকর সুন্দর এক সমাপ্তির দিকে এগোচ্ছে এবারের এই অ্যাশেজের উদ্বোধনী টেস্ট।
শেষ দিন বৃষ্টির কারণে খেলা শুরু হতে বিলম্ব হলো। কিন্তু তাতে কি টেস্ট ক্রিকেট যে তার সৌন্দর্যর ঢালি নিয়ে এদিন উপস্থিত হয়েছিলো বার্মিংহামে। প্রথম সেশন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও টেস্ট ক্রিকেট রোমাঞ্চ ছড়াল তার নানা রূপ দেখিয়ে। এক প্রান্তে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে দলকে টানলেন উসমান খাজা। এসময় ম্যাচ একটু একটু করে হেলে পড়ছিলো অস্ট্রেলিয়ার দিকে।
ঠিক সেসময়ে খাজাকে ফিরিয়ে আশা জাগাল ইংল্যান্ড কাপ্তান বেন স্টোকস। কিন্তু পেরে উঠল না তারা শেষ পর্যন্ত। স্নায়ুর চাপ সামলে অজি দলপতি প্যাট কামিন্সের খেলা মহামূল্যবান এক ইনিংস ও ন্যাথান লায়নের অসাধারণ নবম উইকেট জুটির নৈপুণ্যে রোমাঞ্চকর জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। এজবাস্টনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয় ২ উইকেটে। ২৮১ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে শেষ দিনের ৫.৩ ওভার বাকি থাকতে।
শেষ দুই দিনে বারবার আলোচনায় আসছিল ১৮ বছর আগের এক ম্যাচ। এই মাঠেই ২০০৫ সালে ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২ রানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার শেষ হাসি তাদের মুখেই। যেখানে শেষের নায়ক কামিন্স। ৭৩ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়ে ফেরেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।