ক্রিকেট ফ্যাক্ট

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-৫: সৌম্য সরকার

বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ পর্ব-৫: সৌম্য সরকার

বাংলাদেশ দলের ওপেনিং পজিশনে লিটন দাসের সেরা সঙ্গী কে, সেটা তর্কের খাতিরে সৌম্য সরকারকে হয়তো ধরা যেতে পারে। যদিও টিম ম্যানেজমেন্টের হাতে বিকল্প ব্যবস্থা থাকছে সবসময়ই। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সৌম্য সরকার ওপেনিং পজিশনে দলের জন্য কতটা অবদান রাখতে পারে কিংবা তার সামর্থ্য ও দুর্বলতার জায়গা কোথায় সেই আলোচনাই থাকছে ‘বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড বিশ্লেষণ’ এর আজকের পর্বে।

কম বলে বেশি রান করার প্রবনতা বাংলাদেশ দলের যে কয়েকজন ব্যাটসম্যানের রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার। একটা সময় দলে নিয়মিত সুযোগ পেলেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনি এখন কিছুটা অনিয়মিতই বলা চলে। এর অবশ্য কারনও রয়েছে।

সাধারণত সৌম্য সরকার খেলে থাকেন ওপেনিং পজিশনে। তবে হেড কোচ হিসেবে রাসেল ডমিঙ্গো আসার পর থেকেই তাকে নিয়ে নানা ধরনের পরীক্ষা চালানো হয় মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার অর্ডারে। ওপেনিং পজিশনে তামিম ইকবালের সাথে ডানহাতির কম্বিনেশন মিলিয়ে রাখতেই মূলত সৌম্যকে নিচে ব্যাটিং করানোর ভাবনা আসে টিম ম্যানেজমেন্টের। লোয়ার অর্ডারে সৌম্যকে নিয়ে চালানো পরীক্ষা অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে বরাবরই।

টপ অর্ডারে সৌম্য সরকার দলকে ভালো শুরু এনে দিতে পারলে দলের রানের গতি থাকে উর্ধ্বমুখী। ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের কারনেও টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় থাকতে পারেন সৌম্য সরকার।

দ্রুত রান তোলার সক্ষমতা থাকলেও সৌম্যর দুর্বলতা রয়েছে অন্তত দুটি জায়গায়। সাধারণত ক্রিজে সেট হয়ে রান করতে থাকা অবস্থানেই বাজে শট খেলে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। যার প্রমান মিলেছে বারবার। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একাধিক ম্যাচে সৌম্যর দৃষ্টিকটু আউট জন্ম দিয়েছিলো নানা সমালোচনার।

তার অন্য আরেকটি দুর্বল দিকের মধ্যে রয়েছে স্লো উইকেটে রান না পাওয়া। স্পোর্টিং উইকেটে দেশ কিংবা বিদেশ সব জায়গাতেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে গেলেও স্লো উইকেট যেন কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। কখনও সেট হয়ে আবার কখনও সেট হবার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। আরব আমিরাতের উইকেট তাই তার পারফরম্যান্সে প্রভাব রাখবে সেটা বলা যেতে পারে নিঃসন্দেহে।

দেশের জার্সিতে সৌম্য সরকার এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৬২ ম্যাচ। যেখানে তার রানসংখ্যা ১১০৯। দেশের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে এক হাজার বা তার বেশি রান করা ব্যাটসম্যান হলেন সৌম্য সরকার। আন্তর্জাতিক টি-টিয়েন্টিতে এক হাজার বা তার বেশি রান করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২২.৮১ স্ট্রাইকরেটও হল সৌম্যর। এখন পর্যন্ত ৫টি অর্ধশতকের দেখা পাওয়া সৌম্য সরকারের গড় অবশ্য বেশ নিম্নমুখী।

দেশের জার্সিতে এক হাজার বা তার বেশি রান করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে কম ১৮.৭৯ গড় সৌম্য সরকারের। এর কারণ অধারাবাহিক পারফরম্যান্স।

চলতি বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১২৬ রান করে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেও এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দুটি ডাক সহ সর্বমোট করেছেন ২৮ রান। সেই সাথে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচে সুযোগ পেয়ে করেছিলেন ৪ রান। যা তার নামের সাথে বড্ড বেমানান। ব্যর্থতা কাটিয়ে ব্যাট হাতে বিশ্বকাপে জ্বলে উঠবেন তিনি এমনটাই প্রত্যাশা ভক্তদের।

অন্যদিকে দলের পার্টটাইম বোলার হিসেবে মিডিয়াম পেস বল করতে পারেন সৌম্য সরকার। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৬২ ম্যাচে সৌম্য বল করেছেন ২০ ইনিংসে। যেখানে তার দখলে রয়েছে ৯টি উইকেট। তাই তার কাছ থেকে বোলিংয়ের সার্ভিসটাও পেতে পারে বাংলাদেশ দল।

১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের সাথে নেই তামিম ইকবাল। ওপেনিং পজিশনে তাই লিটন দাসের সাথে দেখা যেতে পারে সৌম্য সরকারকে। একাদশে সুযোগ পেলে হয়তো নিজের সেরাটা দিয়ে আবারও সামর্থ্যের জানান দিতে পারেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button