বিশ্বকাপে রান তাড়ায় ইতিহাস গড়ে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে জিতলো পাকিস্তান
![](https://i0.wp.com/bn.tigercric.com/wp-content/uploads/2023/10/20231011_031930-scaled.jpg?resize=780%2C470&ssl=1)
ওয়ানডে বিশ্বকাপে এতদিন সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে ৩২৯ রান তাড়া করে তারা ইংল্যান্ড বধের ইতিহাস গড়েছিল। ভারতের বিশ্বকাপে এবার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩৪৫ রানের লক্ষ্য ৪৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়েই স্পর্শ করেছে বাবর আজমরা। দুটি রেকর্ডই গড়া হলো ভারতের মাটিতে। পাকিস্তান টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে।
কুশল মেন্ডিসের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে ৩৪৪ রানের পর পাকিস্তানের শুরুটা আহামরি ছিল না। ৩৭ রানের মধ্যে ফিরে যান দুই টপ অর্ডার ব্যাটার ইমাম উল হক (১২) ও বাবর আজম (১০)। তাতে শঙ্কাই জাগছিল। কিন্তু সেখান থেকে পাকিস্তানকে জয়ে পথে নিয়েছে মূলত আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ঝড়ো জুটি। রানের চাহিদা মেটানো ব্যাটিংয়ে ১৫৬ বলে ১৭৬ রান যোগ করেছেন তারা। শফিক ১০৩ বলে ১১৩ রানে ফিরলেও পাকিস্তানকে লক্ষ্যচ্যুত হতে দেননি রিজওয়ান। পায়ে হালকা ইনজুরি থাকার পরেও অদম্য মানসিকতায় একাই ম্যাচটা বের করে নিয়েছেন। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১২১ বলে শেষ পর্যন্ত ১৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। রিজওয়ানের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। শফিক অবশ্য ক্যারিয়ারসেরা ১০৩ বলে ১১৩ রানে ফিরেছেন। তার ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ৩টি ছয়। শফিকের ফেরার পর সৌদ শাকিল ৩০ বলে ৩১ রানে আউট হয়েছেন। তবে রিজওয়ানের সঙ্গে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন ইফতিখার।
শ্রীলঙ্কার টানা দ্বিতীয় এই পরাজয়ে ফিল্ডিংকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। মোক্ষম সময়ে ক্যাচ ছেড়েছেন তারা। লঙ্কানদের হয়ে ৬০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা ও মাথিশা পাথিরানা।
শুরুতে ইমাম উল হকের একটি ভুল রেকর্ড গড়ার মঞ্চ গড়ে দেয় কুশল মেন্ডিসকে। ইমামের ক্যাচ মিসের পর বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন মেন্ডিস। লঙ্কান এই ব্যাটারের দ্রুততম সেঞ্চুরির পাশাপাশি সেঞ্চুরি পেয়েছেন সাদিরা সামারাবিক্রমাও। দুজনের সেঞ্চুরির দিনে ৯ উইকেটে ৩৪৪ রানের বিশাল স্কোরবোর্ড পেয়েছে লঙ্কান দল। যা আবার বিশ্বকাপে লঙ্কান দলের জন্য রেকর্ড। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে দুটি দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর পেলেও কখনও আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে সেটি ছিল না। এবার সেটি তারা করে দেখালো।
হায়দরাবাদে টস জিতে শুরুতে লঙ্কান দল ব্যাটিং করেছে। শুরুটাও ভালো ছিল না। ৫ রানে পড়ে প্রথম উইকেট। তার পর পাথুম নিসাঙ্কা-কুশল মেন্ডিসের ১০২ রানের জুটি ধাক্কা সামলেছে। নিসাঙ্কা ৫১ রানে আউট হলে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ঝড় বইয়ে দেন মেন্ডিস। ৬৫ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। সামারাবিক্রমার সঙ্গে মিলে উপহার দেন ১১১ রানের জুটিও। মেন্ডিস শেষ পর্যন্ত ৭৭ বলে ১৪ চার ও ৬ ছক্কায় ১২২ রানে আউট হয়েছেন। তার পর ইনিংস মেরামত করেছেন সামারাবিক্রমা। ৮৯ বলে ১০৮ রানে আউট হওয়ার আগে ধনাঞ্জয়ার সঙ্গে যোগ করেছেন ৬৫ রান। সামারাবিক্রমার ব্যাটেই তিনশ ছাড়ায় শ্রীলঙ্কার স্কোর। তিনি দলের ৩৩৫ রানের সময় আউট হয়েছেন।
পাকিস্তানের হয়ে ৭১ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছেন হাসান আলী। ৬৪ রানে দুটি নেন হারিস রউফ। একটি করে নিয়েছেন শাহীন, মোহাম্মদ নওয়াজ ও শাদাব খান।