ক্রিকেট বিশ্বকাপবাংলাদেশ ক্রিকেট

ফের অল্পের জন্য পরাজয় বরণ করলো বাংলাদেশ

নাসের হুসেইনের কণ্ঠে তখন উত্তেজনা। তিনি বলছিলেন মাত্র ১ মিটারের দূরত্ব ম্যাচের ভাগ্যটা কীভাবে বদলে দিলো। ক্যামেরা ঘোরাতেই দেখা গেলো হতাশ মাহমুদউল্লাহর মাথায় হাত। যেন তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না। ২০তম ওভারে কেশব মহারাজের পঞ্চম বলটি ছিলো লোয়ার ফুলটস, রিয়াদ যেটিকে তুলে মেরেছিলেন লং অনের দিকে যা গিয়ে ধরা পড়ে প্রোটিয়া দলপতি এইডেন মার্করামের হাতে, নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ডেথ ওভারে মহারাজ তিন-তিনটি ফুলটস করেও দলকে জিতান ৪ রানে। অবশ্য এর আগে তাওহীদ হৃদয় আর মাহমুদউল্লাহকে দেওয়া এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে। মাহমুদউল্লাহকে অযাচিতভাবে আউট দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত ফেরালেও লেগ বাইয়ের ৪টি রান বাংলাদেশ আর পায়নি যেহেতু নিয়মানুসারে একজন ব্যাটারকে আউট দিলে বলটি ডেড হবে।  সেই মুহূর্তেই ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের দিকে নিয়ে যেতে সফল হয়েছিলো প্রোটিয়ারা কারণ দিনশেষে ম্যাচের ব্যবধানও গড়ে সেই ৪টি রানই!

এর আগে টসে জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ‘ছোট’ সাকিবের প্রথম ওভারটি ডি কক শুরু করেছিলেন দুর্দান্তভাবে। ১ চার ও ১ ছক্কা হাঁকানোর পর ৫ম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রজার হেনরিকসকে শেষ বলের জন্য ব্যাটে পাঠান ডি কক। তবে সাকিবের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ফিরে যেতে হয় তাকে। ৩য় ওভারে ফের বোলিং করতে আসেন তানজিম। এবারেও ৩য় বলে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ডি কককে বোল্ড করেন তিনি। ২৩ রান স্কোরবোর্ডে তুলতে তুলতেই আরো দুই ব্যাটার এইডেন মার্করাম (৪) ও ট্রিস্টান স্টাবসকে হারায় প্রোটিয়ারা। এসময় আরো একবার দলের ঢাল হয়ে আসে হেনরিক ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের জুটি। ৭৯ বলে ৭৯ রানের এই জুটিই দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিউইয়র্কের ড্রপ-ইন উইকেটে ১১৩ রানের সন্তোষজনক স্কোর তুলতে সাহায্য করে। ক্লাসেন ৪৪ বলে ৪৬ রান তুলে নিয়ে তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে সাঁঝঘরে ফেরেন, যেখানে মিলারকেও রিশাদ ফেরান ২৯ রানে (৩৮ বলে)।

১২০ বলে ১১৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরতে বেশ আত্মবিশ্বাসীই দেখাচ্ছিলো বাংলাদেশি ব্যাটারদের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে কাগিসো রাবাদাকে অফ সাইডে দারুণ দুইটি ড্রাইভের মাধ্যমে ২টি চারও আদায় করেছিলেন তিনি, তবে সেই ওভারের শেষ বলে ব্যাটের উপরের কোণায় বল ছুঁয়ে কিপারের হাতে চলে গেলে তাকেও ক্রিজ ছেড়ে ফিরে যেতে হয়। পরের ২৫ বলে মন্থর গতির ব্যাটিংয়ে মাত্র ২০ রান সংগ্রহ করেন লিটন ও শান্ত। এসময় ধারাভাষ্যকাররাও বলছিলেন, এই ধীরগতির পিচে রান ধীরে সুস্থে আদায় করলেও রান রেট যেন ৮ এর কাছাকাছি না যায় যেটি বাংলাদেশকে শেষ দুই ওভারে মোকাবিলা করতে হয় পরিশেষে। তাওহীদ এবং মাহমুদুউল্লাহ এবারো দলের হাল ধরেছিলেন সাকিব-শান্তর একই ধরনের শটে বিদায়ের পর। তাওহীদের দুর্ভাগ্যজনক আউট হবার পর ৫ম উইকেট জুটিতে ৪৫ বলে ৪৪ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন তারা। শেষে দুই ওভারে বাংলাদেশের লাগতো ১৮ রান যেটি শেষ ওভারে গিয়ে দাঁড়ায় ১১ রানে। যেখানে বাংলাদেশ একটি বাউন্ডারিও আদায় করতে পারেনি। কিংবদন্তি ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন তাই যথার্থই বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মিডল-অর্ডার লম্বা সময় যাবত হার্ডহিটারের অভাবে ভুগছে। এধরনের ম্যাচে যখন কাউকে এসে একটি বড় শট খেলতে হতো সেখানে তারা আজ পারলো না। এমনকি কেশব তিনটি ফুলটস দিয়েছিলেন, একটি শট ব্যাপারটা বদলে দিতে পারতো।’

এই ম্যাচ জিতলে বাংলাদেশের সুপার এইটের পথ সহজ হয়ে যেতে পারতো। এখন সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে অবশ্যই বাকি দুই ম্যাচে নেপাল ও নেদারল্যান্ডসকে হারাতে হবে টাইগারদের।

Opponent Opponent’s current T20I ranking (BD:09) Starting time Date Result
Sri Lanka 08 06:30 AM 08/06/24 Bangladesh won by 2 wickets
South Africa 04 08:30 PM 10/06/24 Bangladesh lost by 4 runs
Nepal 17 08:30 PM 13/06/24
Netherlands 15 05:30 AM 17/06/24

পয়েন্টস টেবিল:

Team Mat. Won Lost Points NRR
1. South Africa 1 1 0 2 +1.048
2. BANGLADESH 1 1 0 2 +0.075
3. Netherlands 1 1 0 2 +0.024
4. Nepal 1 0 1 0 -0.539
5. Sri Lanka 2 0 2 0 -0.777

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button